সপ্তাহ দুয়েক পরে। একটা অজানা চিঠি এল। কে পাঠিয়েছে? নাম লেখা নেই। যার জন্য চিঠি, খামে তার নাম লেখা আছে। বর্ষা খামটা নিয়ে নিজের ঘরে চলে গেল। দরজা বন্ধ করে কাগজটা খুলল। ছোট অক্ষরে লেখা-

‘ঠোঁটের কোণে খুশির হাসি ফুটে উঠে,

 সূর্যের প্রবল রশ্মি মুখ থুবড়ে পড়ে।

 সূর্যের আলোও আজ মিষ্টি লাগে,

 আমার অস্থির মন শান্ত হয় তোমায় দেখে।’

চার লাইনের ছোট্ট লেখাটি বর্ষার মনে দাগ ফেলেছে।

একবার, দুবার করে কয়েকবার এটি পড়ল। এইটুকু লেখায় সে কি এমন মাধুর্য খুঁজে পেল? বর্ষা হাত থেকে সাদা কাগজ রাখতে চায় না। কাগজটা নামিয়ে রাখার কথা ভাবতেই সে লেখাটা আরও দুবার পড়ল।

হঠাৎ অভ্রর নামটা মাথায় এল। এর কারণ জানা নেই। বর্ষার হাতের এই চিঠির লেখাটিকে অভ্র শাড়ির সাথে রেখে যাওয়া নোটের সাথে মিলিয়ে নিল। কোন মিল নেই। সে হতাশ হল। কাগজ দুটো বইয়ের মধ্যে রেখে বাইরে গেল।

খান বাড়ির বাগানে একটা বড় ফুলের গাছ আছে। গাছে ফুল ফুটে আছে চারদিক ঘ্রানে ভরে উঠেছে। অভ্র গাছের নিচে দাঁড়ানো। গাছ থেকে ফুল ঝরে আলতোভাবে তার গায়ে পরছে। অভ্রর মনে হল তার পেছনে কেউ এসেছে। অভ্র চোখ বুজলো। ক্ষনিকের জন্য তার আভাস পেল তার উপস্থিতি মনকে শান্ত করেছে। অভ্র বিড়বিড় করে বলল,

    ‘তুমি আমার কল্পনা নও,

           তবে কী তুমি?’

  ‘অভ্র ভাই।’

অভ্র চোখ খুলল। সে সোজা হয়ে দাঁড়াল। দৃঢ় ও গম্ভীর গলায় বলল,

  ‘হঠাৎ এখানে?’

  ‘ফুল নিতে এসেছি। বকুল ফুল।’

অভ্র তাকাল। জিজ্ঞাসা করে,

  ‘ফুল কেন?’

  ‘আমি মালা বানাবো।’

  ‘বকুল ফুলের মালা?’

  ‘হ্যাঁ।’

  ‘বাগানে অনেক ফুল আছে সব ছেড়ে বকুল কেন?’

  ‘সব কেন-র উত্তর নেই, অভ্র ভাই।’

অভ্র আর কথা বলল না। বর্ষা হাঁটু গেড়ে বসে ঘাসের উপর থেকে ফুল তুলতে লাগল। অভ্র হাঁটু গেড়ে কিছু ফুল তুললো। বর্ষা কৌতূহলী দৃষ্টিতে তাকাল। অভ্র বিদ্রুপের সুরে বলল,

  ‘শুচি চোখে আমার দিকে তাকানো বন্ধ কর।’

বর্ষা জিজ্ঞেস করল,

  ‘আমি কখন দেখলাম?’ বর্ষা শব্দগুলো হাওয়ায় উড়িয়ে দিল। কিছুক্ষণ পর ফের বলল,

  ‘গতকাল কলেজ থেকে বাড়ি ফেরার পথে কুরিয়ার অফিসে গিয়েছিলাম।’ বলে বর্ষা থামল। অভ্র কিছু বলছে না দেখে আবার বলতে লাগল, ‘চিঠি এসেছে।’

অভ্রর হাত থেমে গেল। শান্ত লোকটি কড়া গলায় বলল,

  ‘এই বয়সে, প্রেমের প্রস্তাব এবং চিঠি আসবে, সেসব নিজের উপর প্রভাবিত হতে দিবি না। আর খান বাড়ির মেয়েকে চিঠি পাঠানোর সাহস কোন ছেলের আছে? খুঁজতে হবে।’

বর্ষা ফুঁ দিয়ে নিঃশ্বাস ফেলল। অভ্র কোনোভাবেই চিঠিদাতা নয়। অভ্র যদি জানতে পারে যে বর্ষা তাকে নিয়ে এসব ভাবছে, সে নিশ্চয়ই ওঁকে চড় মারবে। মূহুর্তে কথাটা মাথা থেকে ঝেরে ফেলল বর্ষা।

বকুল ফুলের মালা গাঁথা শেষ। হাতে পরার জন্য খুব বড় নয় ছোটো করে বানানো হয়েছে। বর্ষা মালা নিয়ে অভ্রর ঘরে এলো। অভ্র গতকাল বলেছিল যে সে বকুল ফুল পছন্দ করে। তাই সকালে তাজা ফুল দিয়ে মালা তৈরি করে বর্ষা। অভ্র রুমে নেই। বর্ষা একটা ভারী নিঃশ্বাস ফেলে দরজার দিকে পা বাড়ালো। বালিশে নিচে অর্ধেক কাগজ দেখতে পেল। বালিশটা তুলে কাগজটা বের করে। দুই ভাঁজ করা কাগজে লেখা একটা চিরকুট দেখল। বিড়বিড় করে পড়ল,

 ‘পরিয়াছ সাদা শাড়ি

মুগ্ধ হইয়াছি আমি।

সাদা শাড়িতে মুগ্ধতা ছড়িয়াছ তুমি

আমি আবার প্রেমে পড়িয়াছি,

সাদা শাড়িতে তোমারে দেখিয়া

অহেতুক নেশায় মরিয়া হইয়া উঠিলাম।’

বর্ষা চোখ বুজলো। আনন্দের হাসি হেসে কাগজটা কপালে ঠেকিয়ে রাখল। সকালে যে চিঠিটা পড়েছিল তার হাতের লেখাও একই। বর্ষা আস্তে করে বলল,

   ‘অভ্র ভাই, আপনার লুকোচুরি আমি ধরতে পেরেছি।’

বর্ষা দীঘির পানিতে পা ভিজিয়েছি। মনটা খুব উদাস, তার চোখে মুখে বিষণ্নতার ছাপ। এবং হাতে একটা কাগজ, তাতে লেখা আছে নানা কথা। সেই লেখাগুলো পড়লে হৃদয়টা কেঁপে ওঠে। মানুষটার কাছে ছুটে গিয়ে জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে করে কিভাবে কেউ এত ভালোবাসতে পারে। প্রশ্ন হল এই ভালোবাসার শুরু কিভাবে?

দীর্ঘ ১৫ দিন, চোখের সামনে মানুষটিকে দেখেও তার মন বুঝতে পারেনি বর্ষা। অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো গভীর জলের দিকে, হাল্কা হাওয়ায় ভেসে যাচ্ছে পদ্মফুল। বর্ষা অন্যমনস্ক: হঠাৎ বিড়বিড় করে বলল,

  ‘ভালোবাসি শব্দটা বলেনি সে কখনো তার অনুভূতি প্রকাশ করেনি। আমি কখনো বুঝিনি, আমি কখনো তার হৃদয়ের আড়ালে লুকিয়ে থাকা ভালোবাসার খোঁজ করিনি। আমি কি এত বোকা? একটা ছেলের চোখে ভালোবাসা দেখতে পাইনি। সে আমাকে নিঃশর্ত ভালবাসে।’

  ‘তুই এখানে কি করছিস?’

কারো কণ্ঠ শোনা গেল। কণ্ঠস্বরের মালিককে চিনতে দ্বিধা হয় না বর্ষার। দীঘির পানির দিকে দৃষ্টি স্থির করে বলল,

   ‘ভাবছি।’

অহিতা তার পাশে বসল। বর্ষার মুখের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করল,

  ‘কি ভাবিস?’

ক্ষীণ কণ্ঠে বলল,

  ‘কিছু না।’

অহিতা একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলল। তারপর মৃদু স্বরে বলল,

  ‘বল, আমি কাউকে বলব না।’

বর্ষা তাকাল। কিছুক্ষণ পর বলল,

  ‘আজ এই প্রথম কারো জন্য ফুলের মালা বানালাম। আমি যখন তাকে দিতে গেলাম, দেখলাম সে সেখানে নেই। আমি তাকে সব জায়গায় খুঁজেও পেলাম না। মনে হয় সে হঠাৎ হারিয়ে গেছে। তারপরে তার লেখা দুটি চিরকুট পেলাম।।’

অহিতা জিজ্ঞেস করল,

  ‘কে সে? অভ্র ভাই?’

বর্ষা ফ্যালফ্যাল করে তাকাল। কড়া গলায় জিজ্ঞেস করল,

  ‘কী করে বুঝলি?’

অহিতার দ্রুত উত্তর,

  ‘আজকাল তোকে ওর সঙ্গে বেশি দেখা যাচ্ছে।’

বর্ষা জোরে নিঃশ্বাস ফেলল। কাগজটা অহিতার হাতে দিল। অহিতা গলা পরিষ্কার করে পড়তে শুরু করল।

‘হুট করে চলে যাও, কাছে থেকে অনেক দূরে

তুমি কল্পনায় বিলাসী!!

স্বপ্ন ভেঙ্গে, দূরে বসে হাসো

মনের আয়নায় তুমি উৎকণ্ঠা!!

বিবর্ণতা দিয়ে আমার ভূমি সাজিয়ে, হঠাৎ

ঊর্মির হৃদয় বুক ফুলিয়ে সাম্বির কাছে ফিরে এসো।

বর্ষা কি বোঝো তার বিরহে আমার চোখে বন্যা?

বুকের রক্তে বর্ষা খুঁজতে খুঁজি!

অস্পৃশ্য প্রেমে ডুবে হারিয়ে যাওয়া

মুগ্ধতার টানে কারো নাগালে থাকা অস্তিত্ব!

কে সে কি একটু বর্ষা ভাসছে নীলে!

বৃষ্টির কথা শোন, তীরে ভেসে থাকা বৃষ্টির হৃদয় কি চায়?

অশান্তিতে সময় কাটছে তোমায় ছাড়া,

তোমার সাদা শাড়ির আঁচল মেলে আজ বর্ষা আসো না!!

শেষ ট্রাম গেলে বর্ষা হয়ে যায় শেষ বর্ষা

তোমার জন্য চঞ্চল মন পাগল!

এক নিপুণ স্পর্শে তুমি ভেঙ্গেছো মনের দেয়াল

বর্ষা তুমি দূরে তীরে বসে হাসছো!

তোমার কথা ভেবে আমি খাতায় ভরে ফেলি অবুঝ সব লেখায়

দুঃসময় শুধু কষ্ট পেতে শেখায়!

বর্ষা তোমার হাত ধরে হাঁটতে চাই?

নরম হাতের কোমল ছোঁয়া আপনাকে অস্থির করে তুলবে?

বুকের মধ্যে অবিরত চোখের পাতা ছুঁয়ে গলে

আলিঙ্গনে নিজেকে হারিয়ে আবার সুখী হতে চাই।

বর্ষায় বৃষ্টি হোক, সব অঙ্গে শীতল ছোঁয়া যাক

তোমার মাঝে আমি, আমার মন হারাই!’

অহিতা হাঁপাচ্ছে। জোরে নিঃশ্বাস ফেলে বলল,

  ‘তোর অভ্র ভাই তো খুব ভালো লিখেছেন!’

বর্ষা মাথা নিচু করল। নিচু গলায় বলল,

  ‘তার সামনে আমি কী করে যাব?’

অহিতা ওর কাঁধে হাত রাখল। নিচু গলায় বলল।

  ‘অভ্র ভাই, এখনো কিছু বলেনি। সেজন্য তুই এমন আচরণ করবি যেন তুই কিছুই জানিস না। তুই অপেক্ষা কর, সে অবশ্যই ভালোবাসার কথা বলবে।’ অহিতা থামল। সে ভ্রু কুঁচকে আবার বলল,

  ‘তুই কিভাবে বুঝলি এটা তোর জন্য লেখা হয়েছে? তোকে উৎসর্গ করে লেখা নেই।’

বর্ষা চোখ বড় বড় করে তাকাল। কর্কশ গলায় বলল,

  ‘এখানে অনেক বর্ষা লেখা আছে। এতক্ষণ পড়ছিস কি গাধী?’

অহিতা বলল,

 ‘এটা ছাড়া। হয়তো পরে বলবে আমি ছড়ার জন্য নামটা একসাথে রেখেছি।’

বর্ষা জোরে নিঃশ্বাস ফেলল।

  ‘আগে পেয়েছি কিন্তু বুঝতে পারিনি।’


দীঘির ঘাট থেকে উঠে অচেনা অজানা রাস্তা ধরে হাঁটছে বর্ষা। ব্যস্ত সময় পার করছে শহর। রাস্তায় দুই বা তিনটা রিকশা ও অটো চলছে। মস্তিষ্ক শূন্য লাগছে । রাস্তার দুই পাশে বড় বড় নারকেল গাছ। একপাশে ধানক্ষেত। রাস্তার পাশে দুটি কুকুর ঘেউ ঘেউ করছে। বর্ষা হতাশা কাটাতে সে ধানক্ষেতের আইল ধরে হাঁটা শুরু করে। সে জানে না কোথায় যাচ্ছে।

সম্বিত ফিরলে চারিদিক অন্ধকার। কানের কাছে মশা গুঞ্জন আর পাড়া থেকে শেয়ালের ডাক ভেসে আসছে। বর্ষা শুকনো ঢোক গিলে পথ খোঁজার চেষ্টা করলো। কিছুই লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। বর্ষা মনে করতে লাগল কিভাবে সে এখানে এসেছে। চোখের পলকে ধানক্ষেত থেকে বেরিয়ে রাস্তায় চলে গেল। জ্যোৎস্নার আবছা আলোয় চারপাশ আলোকিত। সে দূর থেকে কিছু শিয়াল দেখতে পেয়ে সাথে সাথে একটা গাছের আড়ালে লুকিয়ে গেল। বর্ষা সব মনে করতে লাগলো।

মনটা ভালো না থাকায় সে ভিন্ন গ্রামের পথে হাঁটছিল, ধানক্ষেতের গলি ধরে হেঁটে ঢুকে যায়। সে ঘাসের উপর শুয়ে পড়ে আী ঘুমিয়ে যায় কারণ মাঠে ঠান্ডা বাতাস বইছিল। ঘুম ভাঙল মশার কামড়ে। এখন অন্ধকারে বাড়ি ফেরার পথ খুঁজে পাবে কী করে? ফোন কই? কোথাও পরে যায়নি তো?’

ধানক্ষেতের ভেতর থেকে ইঁদুরের আওয়াজ আসছে। পানির পিপাসায় গলা শুকিয়ে গেছে। শেয়াল চলে গেছে ধানক্ষেতে। বর্ষা রাস্তায় এসে সোজা হাঁটতে থাকে। কিছুদূর যাওয়ার পর সে দেখতে পেল কিছু লোক বৃত্তাকারে বসে আছে। বর্ষা ওদের দিকে এগিয়ে গেল। করুণ কণ্ঠে বলল,

  ‘ওখান থেকে একটু পানি দিবেন চাচা? আমার খুব পিপাসা লাগছে।’

বর্ষার মাথা থেকে পা পর্যন্ত তাকিয়ে একটা হাসি দিয়ে বললেন,

  ‘পানি খাবে খুকি? এই নাও সব খাও।’

বর্ষা বোতলে একটা চুমুক নিয়ে বলল,

  ‘খারাপ গন্ধ।’

প্রথমজন বললেন,

  ‘আমাদের কলের জলে প্রচুর আয়রন, তাই অনেক পানিতে গন্ধ করে।”

তৃষ্ণা মেটাতে সে প্রায় সবটা শেষ করে দেয়। চারিদিক হঠাৎ ঘুরতে লাগলো। মাথাটা ঝিমঝিম করছে। মাথায় হাত দিয়ে মাটিতে বসে পড়ল। দ্বিতীয়জন বললেন,

  ‘সম্ভবত মাতাল হয়েছে।’

তৃতীয় একজন বললেন,

  ‘আর একটু অপেক্ষা কর।’

রাস্তার পাশে একটা বন্ধ দোকান। লাইটের আলোয় কয়েকজন পুরুষের মাঝে একজন নারীর শরীর দেখে চমকে ওঠে অভ্র। সে বাইক থেকে নেমে দৌঁড় দিল। অভ্র বর্ষার গালে হাত রেখে বলল,

  ‘এই বর্ষায় তোর কি হয়েছে?’

বর্ষা নেশাগ্রস্ত গলায় বলল,

  ‘অভ্র ভাই আপনি আসছেন।’

বর্ষা অজ্ঞান হয়ে গেল। পাশে বসা লোকদের জিজ্ঞেস করল অভ্র।

  ‘আপনারা তাকে কি পান করিয়েছেন?’

প্রথমজন বললেন,

  ‘জল চাইছিল। আমাদের তৃষ্ণা মেটাতে যা ছিল তাই দিয়েছি।’

অভ্র রেগে গিয়ে একজনকে ঘুষি মারলো। তাদের একজন সেই জায়গা থেকে গ্রামের দিকে ছুটে গেল। অন্য দুজন মদ খেয়ে নেশায় বুদ হয়ে আছে শরীরে কোন শক্তি নেই। তাদেরকে মারধর করে রাস্তায় ফেলে রাখা হয়।

অভ্র চেঁচিয়ে বলল,

  ‘বৃষ্টি উঠ। চল বাসায় যাই।’

ঘুমন্ত গলায় বলল বর্ষা,

  ‘উহু, বাড়ি যাব না অভ্র ভাই। আমি তোমার সাথে থাকব।’

অভ্র রাগ দেখিয়ে বলল,

  ‘তোকে দুই ঘণ্টা ধরে খুঁজছি। বাড়ির সবাই তোকে নিয়ে টেনশন করছে।’

বর্ষা ঝিমাচ্ছে। অভ্র প্যান্টের পকেট থেকে ফোন বের করল। বর্ষার ফোনের লোকেশন এখনও কাছেই দেখাচ্ছে। বাড়িতে কল দিল। পাপিয়া বেগম ফোন রিসিভ করেন। অভ্র তাদের জানায় যে সে বর্ষাকে খুঁজে পেয়েছে। এরপর নেটওয়ার্কের জন্য কল কেটে যায়। অভ্র বর্ষাকে পাঁজা কোলে নিয়ে বাইকের দিকে হেঁটে যাওয়ার সময় লোকজন তাকে ঘিরে দাঁড়ায়।

তৃতীয় ব্যক্তি ইতিমধ্যে মাতাব্বর ও গ্রামের কয়েকজনকে মিথ্যা বলে তার সঙ্গে নিয়ে এসেছে। মাতব্বর তাদের কথা না শুনে গ্রামে নিয়ে আসেন। অভ্রকে চেয়ারে বেঁধে বর্ষাকে মাটির ঘরে বন্দী করে রাখা হল।

মাতাব্বর ফজল মিয়া প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ। তার গ্রামে এমন খারাপ কাজ সে মেনে নিতে পারে না। অবৈধ সম্পর্ক করা যুবক যুবতীকে লোকজন ধরেছে বলে তাদের আহত করেছে। অনান্য জন বলেন, মারের বদলে মার দেওয়া হোক। মাতাব্বর তা করেননি। যেহেতু একটা মেয়ের ইজ্জত জড়িত। তার শরীরে এই কলঙ্ক থাকলে সে আত্মহত্যা করতে পারে। সব কিছু ভেবে বর্ষা ও অভ্রকে বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন মাতবর ফজল মিয়া।

অভ্রর মুখ বাঁধা থাকায় সে কিছু বলতে পারছে না। মাতাব্বরের নির্দেশে বাঁধন খুলে দেওয়া হল, অভ্র সত্যিটা বলল। কিন্তু কেউ বিশ্বাস করল না। কেউ কেউ একসঙ্গে বলেন, বিয়ে এড়াতে ভাই-বোনের সম্পর্কের নাম দিচ্ছেন তারা। কাজী উপস্থিত। জোর করে বিয়ে দেওয়া হবে। বর্ষা নেশাগ্রস্ত ছিল এবং সে এখনও সেই মাটির ঘরে। কাজী এসে অভ্রর সামনে বসে। তাকে কবুল বলতে বলেন। অভ্র গম্ভীর ভঙ্গিতে বসে আছে। নেশা করা অবস্থায় বিয়ে হবে না। সে তা জানে। আর বিয়ে না করলে বর্ষার চরিত্রে দাগ পড়বে। সব দিক চিন্তা করে সে হ্যাঁ বলল। বর্ষা নেশায় মত্ত, সকাল হলেই সব ভুলে যাবে। মনে শুধু অভ্র রাখবে।

কিছুক্ষণের মধ্যে বৈঠক শেষ হয়। অভ্রকে মাটির ঘরে পাঠানো হলো। অভ্র ঘরে ঢুকল। সম্ভবত কারেন্ট নেই। মোমবাতি জ্বলছে। কার্পেটে শুয়ে থাকা বর্ষাকে দেখে হৃদয় ধুক করে উঠল। অভ্র এগিয়ে যায়। নতজানু। বর্ষাকে দু হাতে তুলে জড়িয়ে ধরে। সে নীরবে কাঁদছে। বর্ষা তার দিকে তাকিয়ে বিড়বিড় করে বলল,

  ‘অভ্র ভাই তুমি এখন আমার স্বামী।’ মৃদু হেসে আবার বলল, ‘আমি তোমার বউ।’

অভ্র কেঁদে ফেলল। বর্ষার কপালে একটা গভীর চুমু দিয়ে ক্ষীণ গলায় বলল,

  ‘যা হয়েছে আজ ভুলে যা বর্ষা।’

সকালের সূর্য জানালা দিয়ে এসে বর্ষার মুখে পরছে। বর্ষা ঘুম থেকে উঠে চোখ খুলে দেখে যে সে মাটির ঘরে আছে। সে উঠে বসে দেখল অভ্র মাটির দেয়ালে হেলান দিয়ে ঘুমাচ্ছে। বর্ষা মাথা ধরে বসে আছে। মাথা ঘুরছে। রাতের কথা কিছুই মনে করতে পারল না। বর্ষা উঠে অভ্রর পাশে বসে অভ্রকে ঠান্ডা গলায় ডাকতে লাগল।

  ‘অভ্র ভাই।’

বন্ধ চোখ খুলে বর্ষাকে কাছে দেখে কর্কশ স্বরে বলল,

  ‘তুই আমার এত কাছে কি করছিস?’

অভ্র বর্ষাকে কারো সামনে আনেনি, কারো কাছ থেকে বিয়ের কথা শুনবে এই ভয়ে অভ্র তাকে বাড়িতে রেখে একাই চলে যায় গ্রামের প্রধানের সাথে দেখা করতে। কিছুক্ষণ পর গ্রাম ছেড়ে বেরিয়ে যায়।

গ্রামের বাইরে একটা টং দোকানে বাইক থামিয়ে দিল অভ্র। দোকান থেকে পানির বোতল এনে বর্ষার দিকে বাড়িয়ে দিল। বর্ষা বলল,

  ‘আমি চা খাব।’

অভ্র বলল,

  ‘আগে পানি। আমি চা নিয়ে আসছি।’

হাতের তালুতে পানির বোতল থেকে পানি নিয়ে চোখ ধুয়ে নিল বর্ষা। অভ্র চায়ের কাপ ওর দিকে তুলে বলল,

  ‘ধর।’

বর্ষা মিনমিন কণ্ঠে বলল,

  ‘ধমক দিচ্ছেন কেন?’

অভ্র কর্কশ গলায় বলল,

  ‘তোর জন্য, আমি সেই মাটির ঘরে সারারাত বসে মশার কামড় খেলাম। ধমকাবো না তো কি করব? কে বলেছে একা একা বাইরে ঘুরাঘুরি করতে?’

বর্ষা স্বাভাবিক গলায় বলল,

  ‘শুকরিয়া আদায় করুন অভ্র ভাই, আপনি চোর বলে মার খাননি।’

অভ্র হাসলো। বিড়বিড় করে বলল,

  ‘পাগলী।’

বর্ষা চায়ে চুমুক দিয়ে হঠাৎ বলল,

  ‘ভাই অভ্র, জানো আমার ইচ্ছা পূরণ হয়েছে।’

অভ্র তাকাল। জানতে চেয়ে বলল,

  ‘কি?’

বর্ষা একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলল। চারপাশে তাকিয়ে বলল,

  ‘সকালের সময়। টং দোকানে বসে চা খাওয়া।’

অভ্র হতভম্ব হয়ে যায়। মৃদুস্বরে বলল,

  ‘এটা কেমন ইচ্ছে?’

বর্ষা তাকাল। বলল,

  ‘কেন? এটা স্বপ্ন বা ইচ্ছা হতে পারে না? আমরা মেয়েরা আমাদের মনে এই ছোট ছোট ইচ্ছাগুলোকে যত্ন করে রাখি।’


বাড়ি ফিরে আরেকটি সমস্যার সম্মুখীন হতে হলো। বর্ষার ওপর তার বাবা রাগান্বিত, পাপিয়া বেগম কাঁদছেন। অভ্র তার বুদ্ধি দিয়ে বিষয়টি সমাধান করে। নুর ইসলাম গম্ভীর হয়ে বসে আছেন। বর্ষাকে বারণ করে ফের একা বের না হওয়ার জন্য। স্নান সেরে কিছুক্ষণের মধ্যে বেরিয়ে এল বর্ষা। কলেজে যেতে হবে। হাতে বেশি সময় নেই। পুরোপুরি প্রস্তুত হয়েই নেমে আসে। বড়দের সঙ্গে খেতে বসল। অভ্র নেই। বর্ষা জিজ্ঞেস করল,

  ‘মা কোথায় অভ্র ভাই?’

পাপিয়া বেগম বললেন,

  ‘সারা রাত জেগে ছিল তাই এখন ঘুমাচ্ছে।’

বর্ষা আর রিমা একসাথে বেরিয়ে গেল। বর্ষা হাঁটতে হাঁটতে রাস্তায় ছোট ইটের কোণা এবং খালি বোতলগুলোকে লাথি মারে। বর্ষা ওদের লাথি মেরে মজা নিচ্ছে। রিমা ঘড়ির দিকে তাকিয়ে আছে। হম্বিতম্বি করে বলল,

  ‘তাড়াতাড়ি পা চালা। বেশি সময় নেই।’

ক্যাম্পাসে বসে বন্ধুদের সাথে গল্প করছে। হঠাৎ অহিতা বলল,

  ‘কে সেই ছেলে? নতুন মনে হচ্ছে।’

অহিতার কথা শুনে সবাই ফিরে তাকাল। একটা ছেলে গাড়ি থেকে নামছে। বর্ষা ভ্রুকুটি করল। সন্দেহের সাথে বলল,

  ‘কলেজে আগে দেখিনি।’

মাহিরা গলা চেপে বলল,

  ‘পরিচালক স্যারের ছেলে নিভিয়ান।’

রিমা বলল,

  ‘আজ কলেজে আসছে কেন? আগে কখনো আসেনি।’

মাহিরা বলল,

  ‘সে আজকাল প্রায় আসে। তোরা দেখতে পাস না।’

নিভিয়ান এসে বর্ষার উদ্দেশ্য বলল,

  ‘আমি কি বসতে পারি?’

বর্ষা কিছু বলল না। নিভিয়ান বলল,

  ‘এক্সকিউজ মি?’

হালকা হেসে বললেন মাহিরা,

  ‘হ্যাঁ বসুন।’

অহিতা বলল,

  ‘ঘাসে বসবেন? আমি কাউকে একটা চেয়ার আনতে বলছি।’

নিভিয়ান বসল। তারপর বলল,

  ‘চেয়ার লাগবে না। তোমরাও ঘাসের উপর বসে আছো।’

নিভিয়ান বর্ষার দিকে তাকাল। তারপর ক্ষীণ স্বরে বলল,

  ‘আমি তোমাকে অনেক দিন ধরে খুঁজছি। আমি যেদিন কলেজে আসি সেদিন তুমি আসো না। তাই এতদিন দেখা হয়নি।’

বর্ষা তাকাল। জিজ্ঞাসা করল,

  ‘আপনি খুঁজেছেন কেন?’

  ‘তোমাকে এক ঝলক দেখে; হৃদয়ের তৃষ্ণা মেটাতে।’

বর্ষা চোখ সরু করে ফেলল। অহিতা অনবরত কাশি দিতে লাগল। নিভিয়ান মাথা নিচু করে হাসলো। সে মাথা তুলে স্বচ্ছ কণ্ঠে বলল,

  ‘আমি তোমাকে বিয়ে করতে চাই। কারণ আমি তোমাকে ভালোবাসি।’

বর্ষা হতবিহ্বল দৃষ্টিতে তাকিয়ে।

তিনটা বাজে। কলেজ থেকে সোজা বাসায় চলে এলো ওরা। মেজাজ খুব খারাপ হয়। হঠাৎ এসে বলল আমি তোমাকে ভালোবাসি। ভলোবাসা হয়ে গেল? বর্ষা রুমে চলে গেল। বিছানার উপর বাক্স দেখে সেদিকে এগিয়ে যাচ্ছে। বাক্সটা হাতে নিল বর্ষা। একটি সাদা শাড়ি এবং কিছু গয়না এবং চুড়ি একটা চিরকুট। অভ্র ভাই না তিন্নি আপুর হাতে লেখা। তিনি লিখেছেন-

 ‘আমি জানি না তুই সাদা রঙে কি পেয়েছিস। তবে সাদা শাড়িতে তোকে খুব সুন্দর লাগে। এবার পরীর মতো সাজে নিচে নেমে আয়। বাড়িতে কেউ নেই। বাড়ির গেটের সামনে একটি গাড়ি তোর জন্য অপেক্ষা করছে। দেরি করবি না, তাড়াতাড়ি তৈরি হতে শুরু কর। আর রিমাকে সঙ্গে আনতে ভুলবি না।’

স্নান করে ভেজা চুল শুকিয়েছে। শাড়ি পরার পর দু মুঠো কাঁচের চুড়ি পরে নিল। বর্ষা আর রিমা বাসা থেকে বের হয়ে গেটে এলো। অভ্র গাড়ির দরজায় হেলান দিয়ে আছে। পরনে নেভি ব্লু টি-শার্ট, আর কালো জিন্স, গাঢ় এস কালারের লেদার জ্যাকেট, নীল ও এস কম্বিনেশনের কেচ, কপালে লম্বা চুল এসে পড়েছে। অভ্রকে অসম্ভব সুন্দর লাগছে বর্ষা তার দিকে মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে আছে কিন্তু অনেক চেষ্টা করেও চোখ ফেরাতে পারছে না। অভ্র এক হাত দিয়ে তার চুল পিছনে ঠেলে দিল। গাড়ির দরজা খুলে বলল,

  ‘তাড়াতাড়ি উঠ, সময় কম।’

পিছনে বসে আছে রিমা। বর্ষা অভ্রর দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলল,

  ‘অভ্র ভাই আমরা কোথায় যাচ্ছি?’

অভ্র বলল,

  ‘গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর মকস বিলে একটি দ্বীপ তৈরি করা হয়েছে। যাকে বলা হয় মনপুরা দ্বীপ। সেখানে যাচ্ছি।’

রিমা জিজ্ঞেস করলো,

  ‘সবাই সেখানে আছে?’

অভ্র ছোট গলায় বলল,

  ‘হ্যাঁ।’

এই বৃষ্টি, আবার এই রোদে ঝকমক করছে আকাশ। খাড়া রাস্তা দিয়ে গাড়ি চলছে। খাল ধরে সামনে এগিয়ে এসে দেখা মিললো সারি সারি গ্রাম ও জেলেদের মাছ ধরার দৃশ্য। বিলের মাঝে ঢেউ তুলে যাচ্ছে ছোট-বড় ট্রলার ও ডিঙি নৌকা। তাদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে স্রোতে ভাসছে কচুরিপানা। জানালা দিয়ে বিলের জলরাশির দিকে তাকাল বর্ষা, স্বচ্ছ নীল দেখাচ্ছে জল।

পরিবারের সবাই ইতিমধ্যেই দ্বীপে উপস্থিত। দ্বীপে পৌঁছানোর পর তাদের খুঁজে বের করে সেখানে যায়। সবাই একটা কটেজে বসে আছে। সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলো। দিগন্ত থেকে ঠাণ্ডা বাতাস বইছে। সবাই মোটা কাপড় পরা, বর্ষার শীতে একটু কাঁপছে। অভ্র লক্ষ্য করলো। শরীর থেকে জ্যাকেটটা খুলে বর্ষার কাঁধে রাখল। সবার থেকে দূরে শুকনো কাঠ দিয়ে আগুন জ্বালানো হয়। আগুন জ্বালায় অপূর্ব। নাহিদ ওরা একটা বৃত্তাকারে সেখানে বসলো। আজ বর্ষার জন্মদিন। এবং সে ভুলে গিয়েছিল। সবার উপস্থিতিতে কেক কাটা হয়। নাহিদ তার গাড়িতে গিটার নিয়ে এসেছে। অভ্রর কণ্ঠ খুব ভালো, সে খুব ভালো গায়। অপূর্ব ও নাহিদ একটা গান ধরতে অনুরোধ করলো। মুন্নি আর তিন্নি এসে বসলো।

অভ্র গিটার দেখে বলল,

  ‘তোরা কি প্রস্তুতি নিয়ে আসছিস?’

নাহিদ বলল,

  ‘যেহেতু সুযোগ এসেছে, হাত ছাড়া করব কেন?’

বর্ষা হাঁটুতে মুখ চেপে বসেছে। তার চোখ অভ্রর দিকে স্থির। গিটারের সুরে গান গাইতে শুরু করে অভ্র।

 যদি মন কাঁদে তুমি চলে এসো

চলে এসো এক বর্ষায়,

এসো ঝরো ঝরো বৃষ্টিতে জল ভরা দৃষ্টিতে

এসো কমলো শ্যামলো ছায়,

 চলে এসো এক বর্ষায়!

 যদিও তখনো আকাশ থাকবে বৈরি,

কদমও গুচ্ছ হাতে নিয়ে আমি তৈরী,

উতলা আকাশ মেঘে মেঘে হবে কালো

ঝলকে ঝলকে নাচিবে বজলি আলো

তুমি চলে এসো,

চলে এসো এক বর্ষায়।

নামিবে আঁধার বেলা ফুরাবার পরে

মেঘমল্লার বৃষ্টিরো মনে মনে,

কদমও গুচ্ছ খোপায় জড়ায়ে নিয়ে,

 জল ভরা মাঠে নাচিব তোমায় নিয়ে চলে এসো

তুমি চলে এসো এক বর্ষায়।

সবাই মুগ্ধ হয়ে গান শুনলো। শান্ত ও মনোরম পরিবেশ, ঠান্ডা হাওয়া, সামনে আগুন জ্বলছে। আগুনের লাল-হলুদ আলোয় অভ্রর মুখটা স্নিগ্ধ লাগছে। গানটি বর্ষার হৃদয় ছুঁয়ে গেল। কিন্তু গানের পেছনের অর্থ বুঝতে পারেনি।

বাসায় ফিরে রাত নয়টা বাজে। বর্ষা তার ঘরে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। তার প্রতিবিম্বের উদ্দেশ্য কড়া গলায় জিজ্ঞেস করল,

  ‘ভালোবাসায় এত লুকোচুরি কেন? বলা যায় না মুখোমুখি দাঁড়িয়ে? নিভিয়ানের মত সাহস না থাকলে ইউরোপে পড়ে লাভ কি।’

বালিশে সাদা খাম দেখে বর্ষা ভ্রুকুটি করল। সে এগিয়ে গিয়ে খামটা হাতে নিল। নতুন নোট! সে বিভ্রান্ত হয়ে বসে রইল। যেন এক লাইনে সব কষ্ট লিখে ফেলেছে অভ্র।

        ‘তোমার বিরহে আমার বুকে ব্যথা হয়।’

চারিদিক অন্ধকার, চোখে একটু তন্দ্রা, হাতে একটা চিরকুট নিয়ে বারান্দায় এলো বর্ষা। ক্লান্ত শরীর বিশ্রাম নিতে চায়, মন উঁকি দেয় পাশের বারান্দার অন্ধকার ঘরে। জ্যোৎস্না আকাশে আচ্ছন্ন। চাঁদনি রাতে নীরব আকাশে জ্যোৎস্না মেলায় ভরা চাঁদ। বর্ষা রুমে এলো। বিছানায় শুয়ে আছে। বিড়বিড় করে বলল,

  ‘অভ্র ভাই আর কত?

ঠোঁটে হাসি নিয়ে বুকে বিষাদ পুঁষবেন?’

শেয়ার করুন